তেঁতুল হুজুররা নারীদের পিছিয়ে রাখতে চায় ! না মর্যাদা দিতে চায় ! মেম - একটু ভেবে দেখবেন???
-
জীবনের সবচেয়ে তিব্র কষ্টের একটা হচ্ছে.. কারন এক ম্যাডামকে খুব শ্রদ্ধা করতাম ওনার ছাত্রছাত্রীদের প্রতি প্রবল ভালোবাসার কারনে! আমি সেকেন্ড সেমিষ্টারে যখন মানসিক ভাবে ভয়াবহ বিপর্যস্ত। তখন মেমকে জানালে তিনি আমাকে বড় বোনের জায়গা থেকে সাহস যুগিয়ে ছিলেন। ওনার প্রতি প্রচন্ড পজেটিভ একটা ধারনা ছিল।
-
কিন্ত শুরুর মন্তব্যটা তিনি আল্লামা শফি এবং আলেম/উলামা কে কটাক্ষ করে করেছেন! কিন্ত আমি কাপুরুষ মাথা নিচু করে বসে থাকা ছাড়া কিছুই করি নি! কেউ যদি আমাকে গালি দেয় আমার অতোটা খারাপ লাগেনা। কিন্ত আলেম-উলামাকে হেয় প্রতিপন্ন করে কিছু বললে হয়তো মুখ বুজে সহ্য করি কিন্ত হৃদয়টা চুরমার হয়ে যায়।
-
কিছু কিছু ঘটনায় সারাটা জীবন হৃদয় রক্তক্ষরণে নীল হবে। তার মধ্যে এটাও একটা! সত্যি বলতে কিবা করতে পারতাম। তিনি আমার শিক্ষিকা। হ্যাঁ হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারতাম.. "মেম, আল্লামা শফি সাহেব যে মন্তব্য গুলোই করেছেন সে গুলির কোনটা মিথ্যাচার? কোনটা নারীকে অসম্মান করে করা? কোনটায় নারীকে তিনি পিছিয়ে রেখেছেন?"
আল্লামা শফি দা.বা'র মন্তব্য সমূহ..
১) নারীরা তেঁতুলের মত! কিছু কিছু পুরুষের তাদের দেখলে ঠোঁট থেকে লালা পড়ে!
২) আপনারা আপনাদের মেয়েদের পঞ্চম শ্রেণীর বেশি পড়াবেন না! না হলে মেয়ে হাতছাড়া হয়ে যাবে...
হুজুরের মন্তব্য গুলো কি চরম সত্য নয়?
১) শেষ ১০০ দিনে প্রকাশিত ধর্ষনের পরিমাণটাই দেখুন.. চোখ কপালে উঠে যাবার উপক্রম। এই গুলিতো প্রকাশ্য। আর অপ্রকাশিত? কত লাখ নাকি কোটি? কত লাখ লাখ বোন আছে যারা লোকলজ্জ্বার ভয়ে, পরিবারের সম্মান বাঁচাতে নিরবে সহ্য করছে নরক যন্ত্রনা তার কি হিসাব কেউ রাখে? মেম, আপনার কাছে বিনীত প্রশ্ন, আল্লামা শফি সাহেব কি মিথ্যা বলেছেন? ৩ মাসের বাচ্চা, ৩ বছরের বাচ্চা হোক আর ৩০ বছরের নারীই হোক.. নারীদেহ দেখলেই কিছু কুকুরের লালা পড়ে কি পড়ে না? বর্তমান ঘটনাপ্রবাহতো সেটাই প্রমাণ করছে।
২) আল্লামা শফি সাহেব নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে নন! তিনি প্রচলিত নোংরামিতে ভরা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। তিনি কাওকে মাদ্রাসায় পড়াতে নিষেধ করেননি। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক ভয়াবহ অধঃপতন প্রকাশ্য। (মেম, মাপ করবেন, আমি যদি আপনার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেই.. "আপনি কতখানি ইসলাম মানেন? না মানলে কেন মানেন না? আর আপনার গ্রামের সমবয়সী যে মেয়েটা/ছেলেটা মাদ্রাসায় পড়েছে উনি কতখানি দ্বীন মানছেন? কিংবা এই প্রশ্নটাও আসতেই পারে " আপনি আধও ইসলাম মানাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন কিনা?".
কিন্ত একজন মুসলমানের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু হল তার ঈমান। তার দ্বীন। তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানওয়াতায়ালার হুকুম মেনে চলা! স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যখন আমাকে আমার রব আল্লাহকেই ভুলিয়ে দিচ্ছে (স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া ৮০ ভাগেরও বেশি ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে) তাহলে তার থেকে সে কুশিক্ষা গ্রহণ না করাটাই উত্তম নয় কি?
আল্লামা শফি সাহেব সে প্রেক্ষাপট কে সামনে রেখে মন্তব্যটি করেছেন।
United Nations ২০০০ সালে বাংলাদেশে ‘Rate of Abortion’- এর ওপর একটি পরিসংখ্যান চালায়। দেখা যায়, প্রতি ১০০০ জনে মাত্র ৪ জন নারী এবোরশন করছে। কিন্তু সেই সংখ্যা ২০১৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে, প্রতি ১০০০ জনে ২৯ জন। শুধু ২০১৪ সালেই প্রায় আট লাখ নারী তাদের সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। সহজ কথায়, হত্যা করে। আরো সহজ করে বললে, এরা একেকটা খুনী। বলা বাহুল্য এইসব নারীর বেশিরভাগই অবিবাহিত। সমাজের কাছ থেকে নিজেদের খারাপ কাজ লুকিয়ে রাখতে তারা এই জঘন্য ও নিজের জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেঁচে নিতে বাধ্য হয়। যারা পরিসংখ্যানের ফিল্ডে বিশেষজ্ঞ তারা অবশ্যই জানেন, এ ধরনের কেইসে তথ্য-উপাত্তে যে সংখ্যাটা উঠে আসে, বাস্তবে দেখা যায় প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। আর এই ইন্টারনেটের যুগে ২০১৯ সালে সংখ্যাটা যে হাজারে একশোর কাছাকাছি এসেছে তাও সহজে অনুমেয়।
মেম, আপনি অনেক জ্ঞানীগুনী। আমি খুব নগন্য একজন। মেম, আলেম-উলামারা কখনই আপনাদের শত্রু নয়! বরং তারাই আপনাদের সত্যিকার শুভাকাঙ্ক্ষী। মেম, ভুলে গেছেন অন্ধকার যুগে নারীরা কত অসম্মানের জায়গায় ছিল? ইসলাম নারীকে সেই জায়গা থেকে তুলে এনে মা, বোন, স্ত্রী'র মত মহা সম্মানী সব লকব দিয়েছে। নারী চাইলে যথাযথ পর্দা মেইনটেইন করে যে কোন হালাল কাজই করতে পারবে। আপনাদের শরীরের হেফাজতের জন্য যে পর্দার বিধান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দিয়েছেন.. আলেম-উলামারা সেটা মানতে বললেই তাদের গালমন্দ করছেন? তাহলে পরোক্ষ ভাবে কি আপনারা আল্লাহর বিপক্ষে লড়ছেন না?
মেম, কিছু বছর আগেও কত অজস্র সম্মান ছিল নারীদের। নারী দেখলেই ৯০ ভাগ পুরুষ চোখ নিচু করে ফেলতো। কিন্ত আজ? আপনারা যতোই ইসলামের গন্ডি থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছেন ততোই ভয়াবহ অপমানিত হচ্ছেন। "নারীমুক্তি" নামক পশ্চিমাদের দেয়া কূটদর্শন নারীদের আবার সেই অন্ধকার যুগের অসম্মানের জায়গাতেই নিয়ে যাচ্ছে না কি? আজকালতো বিজ্ঞাপন দেখলে মনে হয় এক টাকার একটা শ্যাম্পুও বিক্রি হতে চায় না নারীদেহের অশ্লীল প্রদর্শনী ছাড়া। আহ! আর আপনারা কিনা সেই নরকময়দর্শন আপনারা দুইহাতে গ্রহণ করছেন) আর যে ইসলাম আপনাদের এত এত সম্মান দিল তাকে গালমন্দ করছেন? আহ! আফসুস!
Comments
Post a Comment